
আশরাফুল ইসলাম শ্রীপুর গাজীপুর প্রতিনিধি : গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের ভেতরে অচেনা যুবক হত্যার ঘটনায় জড়িত তিনজনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১।
খুন হওয়া ওই যুবকের পরিচয় পাওয়া গেছে। ওই যুবকের নাম কবির হাসান (২২)। তিনি রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার নয়াপাড়া গ্রামের জাবিউল ইসলামের ছেলে।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, ঝিনাইদহ জেলার কোটচাঁদপুর উপজেলার গালিমপুর গ্ৰামের রুস্তম আলীর ছেলে মো. মাসুদুর রহমান (৩৭), একই উপজেলার জালালপুর গ্রামের আব্দুল হাকিমের ছেলে মো. আব্দুল হালিম (৩৬) ও যশোর জেলার চৌগাছা উপজেলার চৌগাছা গ্ৰামের আনোয়ার হোসেনের ছেলে লালটু মিয়া (৪০)।
পার্কের সীমানা প্রাচীরের পাশ থেকে পাওয়া অজ্ঞাত যুবকের পরিচয় শুক্রবার রাত সাড়ে এগারোটায় গণমাধ্যমে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে এমন তথ্য নিশ্চিত করেছে র্যাব-১।
একই সাথে ঘটনায় জড়িত তিনজনকে ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা সবাই এ ঘটনার সাথে জড়িত ছিলেন বলে স্বীকার করেছেন। এছাড়াও গ্রেপ্তারকৃতরা মানব পাচার, চাকরি দেয়ার কথা বলে প্রতারণাসহ নানা অপকর্মের সাথে জড়িত রয়েছে বলে জানান, র্যাব-১ পোড়াবাড়ি ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার আব্দুল্লাহ আল মামুন।
নিহত কবিরের ভগ্নিপতি শাহিন মিয়া প্রতিবেদককে জানান, কবিরকে মন্ত্রণালয়ে ড্রাইভারের চাকুরি দেয়ার কথা বলে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ থানার কুতুবভাগ গ্রামের ফজর আলীর ছেলে নাজমুল(৩৫) কবিরের বাবার কাছ থেকে সাড়ে ৮ লাখ টাকা নেয়। গত ২৫ মার্চ ড্রাইভিং শেখানোর কথা বলে কবিরকে রংপুর থেকে গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুরে নিয়ে আসে। সর্বশেষ ২৯ মার্চ বিকেলে কবির তার বাবার সাথে মোবাইলে কথা বলেন এরপর থেকে কবিরের মোবাইল ফোন বন্ধ পায় তার পরিবারের লোকজন। পরে ৩০ মার্চ সকালে সাফারি পার্ক থেকে মুখে কসটেপ ও গলায় বেল্ট বাধা অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ বিষয়ে র্যাব-১ পোড়াবাড়ি ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার লেঃ কমান্ডার আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারী পার্কে উদ্ধার হওয়া অজ্ঞাত ওই যুবকের পরিচয় উদঘাটনে র্যাবের অনসাইট আইডেনটিফিকেশন এন্ড ভেরিফিকেশন সিস্টেমের (ওআইভিএস) সহায়তায় তদন্ত শুরু করা হয়। এর মাধ্যমেই ওই যুবকের পরিচয় শনাক্ত করা হয়। পরে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ৩জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তিনি আরও বলেন, গ্রেপ্তারকৃতদের নিকট হতে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত প্রাইভেটকার, ২ টি গামছা, ৫ টি মোবাইল ফোন, ২ টি ল্যাপটপ, ১ টি ডেক্সটপ, নগদ ১১ হাজার ২শ ৩০ টাকা, বিভিন্ন ধরনের ভিজিটিং কার্ড, ১৫ টি বায়োডাটা, ফাকা স্ট্যাম্প এবং প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন ধরনের সিল এবং অফিস আইডি কার্ড উদ্ধার করা হয়। এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
উল্লেখ্য, গাজীপুর জেলার শ্রীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের ৪ নম্বর গেটের ইন্দ্রপুর এলাকায় সীমানা প্রাচীরের ভিতরে গত ২৯ মার্চ সকালে একটি মরদেহ পরে থাকতে দেখে স্থানীয়রা। পরে পার্ক কর্তৃপক্ষকে খবর দিলে পার্ক কর্তৃপক্ষ শ্রীপুর থানা পুলিশকে জানালে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। এরপর থেকে পুলিশ, সি আইডি,পিবি আই, র্যাব উপস্থিত হয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। মরদেহের কোন পরিচয় না পাওয়ায় ময়নাতদন্তের পর অজ্ঞাত হিসেবে দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে।