শিরোনাম
তাহিরপুরের শান্তিপুরে নদী তীর কেটে খনিজ বালু লুটে বিক্রির ঘটনায় আটক-১ বন্দরে ছিনতাইকৃত গরুসহ ট্রাক উদ্ধার মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীর স্ত্রীর মাগফেরাত কামনায় দোয়া মাহফিল শ্রীপুরে নিখোঁজের চার দিন পর শিশুর লাশ উদ্ধার, আটক দম্পতি কালিয়াকৈরে নাশকতা পরিকল্পনার অভিযোগ ইরাদ সিদ্দিকীর নামে  কালীগঞ্জে ৩-৪ মাসের বিদ্যুৎ বিল একসাথে, গ্রাহকের বোঝা ভালুকায় শিক্ষকদের মানববন্ধন শ্রীপুরে নিখোঁজের চার দিন পর বিল থেকে শিশুর লাশ উদ্ধার শ্রীপুরে কৃষকের গোয়াল ঘর থেকে পাঁচটি গরু চুরি কালিয়াকৈরে মিথ্যা-ভিত্তিহীন সংবাদ প্রচার প্রতিবাদে সাবেক মেয়রের সংবাদ সম্মেলন শ্রীপুরে গ্রেপ্তারের পর হাতকড়া সহ পালিয়েছে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মেধা থাকলেই হবে না দেশের উন্নতির জন্য শিক্ষিত হতে হবে- বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মমিনুর রহমান শ্রীপুরে এক বছরেই ভাঙন বরমী সড়ক, নিম্নমানের কাজের অভিযোগ প্রতিদিনই ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন যাত্রী ও চালকরা
মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫, ০৪:৫৪ পূর্বাহ্ন

কালীগঞ্জে শখের মাছ শিকারিদের উৎসব, কেউ পেশায় কেউ নিছক নেশায়

রিপোটারের নাম / ৩৩ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর, ২০২৫

কালীগঞ্জ (গাজীপুর) প্রতিনিধি: বর্ষা মানেই শুধু বৃষ্টি নয়-এ সময়টা মাছ শিকারিদের কাছে আনন্দেরও মৌসুম। কেউ জীবিকার তাগিদে, কেউবা নিছক শখে ছুটে যান জলাশয়ের ধারে। গাজীপুরের কালীগঞ্জের বিল-ঝিল, নদী-নালা আর খালের পাড়ে এখন জমে উঠেছে বড়শি ধরার উৎসব।

আষাঢ়-শ্রাবণের শুরুতেই যখন চারদিক জলময় হয়ে ওঠে, তখন প্রাণ ফিরে পায় কালীগঞ্জের বিল ও নদীগুলো। সঙ্গে জেগে ওঠে শখের মাছ শিকারিদের দল। কেউ পেশায় ব্যবসায়ী, কেউ শিক্ষক, কেউ চাকরিজীবী-তবে সবারই এক পরিচয়, তারা বড়শির টানে ছুটে আসেন এই জলভরা মাঠে।

জেলেরা যেখানে সারা বছর মাছ শিকারেই ব্যস্ত, সেখানে এই শৌখিন শিকারিরা মৌসুমি অভিযানে নামেন। কেউ বড়শি ফেলে নদীর ধারে বসে থাকেন, কেউ আবার ডিঙি নৌকা ভাড়া করে চলে যান জলাশয়ের গভীরে।

“মাছ ধরার আনন্দটাই আলাদা,” বলছিলেন বেলাই বিলের এক নিয়মিত শিকারি। “দিনভর বসে থেকেও যদি একটা বড় মাছ পাই, তাতেই সারাদিনের ক্লান্তি মুছে যায়। টাকা-পয়সা ওঠে কি না, সেটা ভাবি না।”

অনেকে জানান, টোপ বানাতে কেউ কেউ শত-হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ করেন। কারও কাছে এটা প্রতিযোগিতা, কারও কাছে ধ্যানের মতো এক অভ্যাস।

কালীগঞ্জ উপজেলার বেলাই বিল, আফাইন্নার বিল, অন্যান্য জলাশয় ও শীতলক্ষা নদীতে অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত চলে এই “বড়শি মৌসুম”। সকাল থেকেই ডিঙি নৌকা, বাঁশের চেয়ার, ছাতা, টিফিনবক্স-সব নিয়ে হাজির হন শিকারিরা।

বিকেল গড়ালে পাড়ে ভিড় জমে দর্শকদেরও। কেউ কৌতূহল নিয়ে দেখেন, কেউ পরামর্শ দেন, আবার কেউ মাছ ধরার মুহূর্ত ক্যামেরাবন্দি করেন।

কালীগঞ্জ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সুলতানা রাজিয়া বলেন, “শখের মাছ শিকার আমাদের গ্রামীণ সংস্কৃতির অংশ। এতে মানুষ প্রকৃতির সঙ্গে মিশে যায়। আমরা চাই, সবাই নিয়ম মেনে শিকার করুক-ছোট মাছ ছেড়ে দিক, জলাশয়ের ভারসাম্য বজায় থাকুক।

মাছ ধরা এখন শুধু জীবিকার বিষয় নয়-এটা হয়ে উঠেছে গ্রামীণ বিনোদনের এক অনন্য মাধ্যম। ছুটির দিনে অনেকে পরিবার নিয়ে আসেন, কেউ রান্না করেন ধরা মাছ দিয়েই, কেউবা বন্ধুর সঙ্গে ছোটখাটো প্রতিযোগিতা আয়োজন করেন।

বৃষ্টি থামলে, সূর্যের আলো ঝলমল করলে আর জলের ওপর বাতাস দোলে-তখন শুরু হয় বড়শির খেলা। হঠাৎ বড় মাছ টোপে ধরা পড়লে পাড়ে ছড়িয়ে পড়ে উচ্ছ্বাস। কেউ হাসে, কেউ চিৎকার দেয়, আবার কেউ বলে-“এই আনন্দের দাম টাকায় মাপা যায় না!”

বর্ষা শেষে জল কমে এলেও শিকারিদের মন থেকে বড়শির টান যায় না। তারা বলে, “মাছ না ধরলে দিনটা অসম্পূর্ণ লাগে।”

কালীগঞ্জের জলাশয়গুলো তাই শুধু জীবিকার উৎস নয়-এগুলো এখন মানুষ ও প্রকৃতির সংযোগের প্রতীক।

বড়শির ফাঁদে ধরা পড়ে শুধু মাছ নয়, ধরা পড়ে আনন্দ, ধৈর্য আর জীবনের রঙ।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ